আল্লাহ পবিত্র — তাহলে তিনি নোংরা ও অপবিত্র জিনিস সৃষ্টি করলেন কিভাবে?

বিষয়টা ভুল বোঝার প্রধান কারন হলো - আমরা সৃষ্টি বুঝি না। আমরা আবিষ্কার ও উদ্ভাবন বুঝি।
কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করার আগেও ওই দেশটি সেখানে ছিলো। কলম্বাস খুজে বের করেছে। জগদীশ বসু আবিষ্কারের আগেও গাছের প্রাণ ছিলো। জগদীশ বসু সেই সত্যটা খুজে বের করেছে। আবিষ্কার (discover) হলো - আগেই ছিলো, এমন জিনিস খুজে বের করা।

গ্রাহাম বেল টেলিফোন উদ্ভাবন করার আগে, টেলিফোন বলে কিছু ছিলো না। তিনি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জোড়া দিয়ে টেলিফোন বানিয়েছেন।
উদ্ভাবন (invent) হলো - আগেই আছে, এমন কিছু জোড়া দিয়ে নতুন কিছু বানানো।

কোন একটি ফলের বীজ ভেঙে দেখুন। ওর মধ্যে তেমন কিছুই নেই। অথচ, সেই বীজ মাটিতে পুতে রাখলে ওটা থেকে সম্পূর্ণ গাছ জন্মে। গাছে ডাল, পাতা, ফুল, ইত্যাদি সবই থাকে। কিন্তু বীজের ভেতরে এসব কিছুই ছিলো না। আরো আছে। আমদের মতন পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি হয়েছে কয়েক ফোঁটা তরল থেকে। এটাকেই সৃষ্টি (creation) বলে। কিছুই লাগে না। কোন কিছু জোড়া দেওয়া লাগে না। কোন কিছু ছাড়াই তৈরি হয়।

নোংরা আবিষ্কার করলে, সেটা স্পর্শ করতে হতো। যদি উদ্ভাবন করতে হয়, তাহলে আরো বেশি স্পর্শ করতে হতো। কিন্তু,

আল্লাহ আবিষ্কার বা উদ্ভাবন কোনটাই করেন না। আল্লাহ সৃষ্টি করেন। সৃষ্টি করার জন্য স্পর্শ করা লাগে না ; এমনকি দেখাও লাগে না। হুকুম দিলেই নোংরা অপবিত্র জিনিস সৃষ্টি হয়ে যায়। এটাকেই সৃষ্টি বলে। এমনিতেই হয়।

পাল্টা প্রশ্ন থাকবে - নোংরা, অপবিত্র ইত্যাদি জিনিস সৃষ্টি করার কি দরকার ছিলো?

এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনাটা মাত্র এক কথায় বলছি :

পৃথিবীতে সর্বদা স্বয়ংক্রিয় রিসাইকেল হচ্ছে। কোন জিনিস নষ্ট হয়, পচে যায়, মাটিতে মিশে যায়, আবার উৎপন্ন হয়। এই স্বয়ংক্রিয় রিসাইকেল এর পেছনে খুবই জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়া রয়েছে। এমন হাজার হাজার উপাদানের মধ্যে, কোনটা ক্ষতিকর সেটা আমরা চিনতে পারতাম না। ওই ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে নোংরা, পঁচা, দুর্গন্ধ বানিয়ে, আমাদেরকে ওসব থেকে দূরে রেখেছে।

আল্লাহ দুনিয়াতে সব কিছুই মানুষের কল্যাণের জন্য দিয়েছেন। সুবহান-আল্লাহ (অর্থ - আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি)

Post a Comment

0 Comments