অখণ্ড ভারতের পথে নতুন রূপরেখা: বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান ও চীনকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তুতি নরেন্দ্র চৌদির

নয়াদিল্লি—
ভারতের রাজনৈতিক ও কৌশলগত মহলে নতুন করে আলোচনায় এসেছে তথাকথিত ‘অখণ্ড ভারত’ ধারণা। নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র চৌদি তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ও কৌশলবিদদের নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন, যার লক্ষ্য ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের অংশ হিসেবে বিবেচিত অঞ্চলগুলোকে পুনরায় ভারতের প্রভাববলয়ে আনা।

সূত্র জানায়, এই পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান এবং চীনের কিছু অংশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হচ্ছে। সরকারিভাবে একে “সভ্যতাগত পুনঃসংযোগ” বলা হলেও, বাস্তবে এটি একটি বিস্তৃত ভূরাজনৈতিক প্রকল্প বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চৌদি ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান,
“ভারত কেবল একটি রাষ্ট্র নয়, এটি একটি সভ্যতা। উপমহাদেশের বর্তমান সীমান্তগুলো ঐতিহাসিক বাস্তবতার প্রতিফলন নয়।”

ইতিহাস টেনে এই ধারণার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হচ্ছে—মৌর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি, প্রাচীন বাণিজ্যপথ, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাব, এমনকি ব্রিটিশ শাসনের আগের মানচিত্রও আলোচনায় আনা হয়েছে। সরকার-ঘনিষ্ঠ থিঙ্কট্যাংকগুলো ইতোমধ্যে বিভিন্ন গবেষণাপত্র ও সেমিনারের মাধ্যমে এই বর্ণনাকে শক্ত ভিত্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হচ্ছে “১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালের রাজনৈতিক বিভাজনের ঐতিহাসিক সংশোধন”-এর কথা। পাকিস্তানকে দেখা হচ্ছে “অসমাপ্ত পার্টিশন সমস্যা” হিসেবে। নেপাল ও ভুটানকে “স্বাভাবিক সাংস্কৃতিক অংশীদার” এবং চীনের ক্ষেত্রে “ঐতিহাসিক সীমান্ত বিরোধের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি”র ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশ ইতোমধ্যে এই বিষয়টিকে জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। টকশো, কলাম ও বিশেষ প্রতিবেদনে বারবার উঠে আসছে প্রশ্ন— “ভারত কি কেবল তার বর্তমান সীমানায় সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি তার সভ্যতাগত ভূগোল পুনর্নির্ধারণ করবে?”

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ন্যারেটিভ শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের শক্তির ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করতে পারে। যদিও সরকারিভাবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে চলমান প্রস্তুতি ও বক্তব্যগুলো নতুন এক বাস্তবতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিশ্লেষক মহলের একাংশের মন্তব্য— ইতিহাস যখন রাজনীতির হাতিয়ার হয়, তখন মানচিত্র কাগজে নয়, বক্তব্যে বদলাতে শুরু করে।

Post a Comment

Previous Post Next Post